বসন্ত

প্রশান্তির ছায়া সৌন্দর্য দিয়ে হৃদয় জয় করে পলাশ গাছটি
পলাশ ফুলের গেলাস ভরি, পিয়াব অমিয়া তোমারে প্রিয়া। চাঁদিনি রাতের চাঁদোয়া-তলে, বুকের আঁচল দিব পাতিয়া। নয়ন-মণির মুকুরে তোমার দুলিবে আমার সজল ছবি, সবুজ ঘাসের শিশির ছানি মুকুতা-মালিকা দিব গাঁথিয়া। আমাদের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের বিখ্যাত এই কবিতার মতো সৌন্দর্য মুগ্ধতা ছড়ানো দৃশ্য দিয়ে হৃদয় জয় করা এক পলাশ গাছ। শতবর্ষের বেশি পুরনো এই বহুরূপী সৌন্দর্যের গাছটি সহজেই মানুষের মনকে আকৃষ্ট করে৷ জীর্ণ মনকে সতেজ করে তুলে৷
লাল মাটি আর সবুজ গাছগাছালিতে ভরপুর অনিন্দ্য সুন্দর এক গ্রাম। কোথাও উঁচু আবার কোথাও নিচু রাস্তা। বসন্তের নানান ফুল ফলের ঘ্রাণ ভেসে আসছে বাতাসের সাথে৷ কুকিলের ডাক আর নাম না জানা অনেক পাখির কুহুতান চারদিকে। গাজীপুর জেলার কাপাসিয়া উপজেলার বারিষাব ইউনিয়নের ছেলদিয়া গ্রামে এই গাছের অবস্থান।
পাকা কাঁচা সড়ক পেরিয়ে মাটির মেঠো পথ পেরিয়ে যেতেই দেখা মিলবে ধানের সবুজ জমি৷ এরিমধ্যে সবুজের বুকে যেনো একখণ্ড লাল চিহ্ন। এটি পলাশ গাছে ফুটা ফুল। সবুজের ভিতর লাল ওপর থেকে দেখলে মনে হয় এটি যেনো আমাদের স্বাধীনতার প্রতিক লাল সবুজের জাতীয় পতাকা। এমনি সৌন্দর্যের প্রতীক হয়ে যুগ যুগ ধরে বেঁচে আছে গাছটি।
বসন্তের ভরদুপুরে এই গাছের নিচে একবার সময় কাটালে প্রেম মোহে পড়তে বাধ্য হতে হবে। বসন্তের শীতল হাওয়া আর মিষ্টি রোদ এনে দেয় তৃপ্তির ঢেঁকুর। ফসলের মাঠের পানিতে শীতল হওয়া মাটিতে খালি পায়ে হাটলে মনের মধ্যে উচ্ছাস ছড়াবে। মনকে মুহূর্তে শীতল করে দিবে প্রকৃতি। ইট-পাথরের শহরে যাদের মন বিষাক্ত হয়ে ওঠেছে তাদের মনের শান্তি ও তৃপ্তির খোরাক হতে পারে এমন দৃশ্য।
এই পলাশ গাছটির বয়স কতো হয়েছে তার সঠিক ধারণা স্থানীয় কারো নিকট পাওয়া যায়নি। তবে এটির বয়স শতবর্ষ ছাড়িয়ে গেছে আরো আগেই এ বিষয়ে সবাই একমত। প্রকৃতিতে আপনা-আপনি বেড়ে ওঠা এই গাছটি কৃষকদের পরম বন্ধু হয়ে আছে। কৃষকের ক্লান্ত শরিল মুহূর্তে সজীবতা ফিরিয়ে আনে। ভরদুপুরে একটি ছায়াতে আশ্রয় নেওয়ার জন্য আসেন মাঠের কৃষকরা। কিছুক্ষণের মধ্যে নিজের অজান্তেই ঘুম চলে আসে চোখে।
স্থানীয় কৃষক আফাজ উদ্দিন বলেন, আমার নিজের বয়স ৬০ বছর ছুঁই ছুঁই। আমার পিতার কাছে শুনছি গাছটি তিনি এমনি দেখেছেন শুরু থেকেই আমরা মাঠে কাজ করে বিশ্রাম নেই। এই ছায়ার নিচে বসে খাবার খাই। আমাদের পরম উপকারী বন্ধু হয়ে আছে পলাশ গাছটি।
নরসিংদী থেকে ঘুরতে আসা আবদুল্লাহ বলেন, কয়েকজন বন্ধু মিলে ঘুরতে আসছি, সত্যি অসাধারণ লাগলো আমাদের কাছে। এই সৌন্দর্য টিকিয়ে রাখতে হবে। বিশেষ করে এই গাছের সৌন্দর্য হচ্ছে ফুল। ঘুরতে আসা কেউ যেনো ফুল না ছিঁড়ে এ বিষয়ে সবাইকে সচেতন থাকতে হবে৷ গাছ বেঁচে থাকলে সৌন্দর্য বেঁচে থাকবে।
এসআর
বরিশালে বসন্ত উৎসব পালিত
ঋতুরাজ বসন্ত মানেই প্রকৃতিতে প্রাণের নতুন ছোঁয়া। রঙিন ফুলের হাসি ও পুষ্পিত সৌরভ নিয়ে বসন্ত প্রত্যেকের হৃদয়ে নাড়া দেয়। পহেলা ফাল্গুন শবেবরাত হওয়ায় প্রতিবছরের ন্যায়ে এবছর ১৪ ফেব্রুয়ারির পরবর্তীতে বসন্ত উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে আজ ১৭ ফেব্রুয়ারি।
সোমবার ( ১৭ ফেব্রুয়ারি) সকালে বরিশাল সরকারি মহিলা কলেজ প্রাঙ্গণে এ উৎসবের আয়োজন করা হয়।
নানান রঙের পোশাকে নেচে-গেয়ে শিক্ষার্থীরা নাচ-গান, কবিতা পাঠ, নাটক মঞ্চায়ন ও হাতে আলতা-মেহেদী লাগিয়ে বসন্তকে বরণ করে নেন ছাত্রীরা। উৎসস্থলে শিক্ষার্থীরা অনুষ্ঠান উপভোগ করেন।
অনুষ্ঠানে কলেজ অধ্যক্ষ প্রফেসর আসাদুজ্জামান সহ বরিশাল শিক্ষা বোর্ড ও বিভিন্ন কলেজের শিক্ষকরা উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়াও বসন্ত উৎসব উপলক্ষে পিঠা উসৎসবের আয়োজন করা হয়েছে কলেজ প্রাঙ্গনে।
উৎসব নিয়ে শিক্ষার্থীরা বলেন, বসন্ত এলে মনে হয় নতুন করে আবার জীবন শুরু করলাম। ক্লাস-পরীক্ষার ব্যস্ততার মধ্যে এ দিনটি যখন আসে বন্ধু-বান্ধবদের সঙ্গে আড্ডা-ঘোরাফেরা সবমিলিয়ে দিনটা অনেক মজায় কাটে। তবে এবার একটু আলাদা হয়েছে। কারণ পহেলা ফাল্গুন শবেবরাত হওয়ায় আজ আমরা বসন্ত উসৎব উপভোগ করলাম।
এআই

নেত্রকোনায় বসন্তকালীন সাহিত্য উৎসব
বসন্তকে বরণ করতে প্রতি বছরের ন্যায় এবারও পহেলা ফাল্গুন নেত্রকোনায় সাহিত্য সমাজ আয়োজন করেছে ২৮তম বসন্তকালীন সাহিত্য উৎসব ও খালেকদাদ চৌধুরী সাহিত্য পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠান।
শুক্রবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) সকাল নয়টায় জাতীয় সংগীত, জাতীয় পতাকা ও সাংগঠনিক পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে জেলা শহরের মোক্তারপাড়া বকুলতলায় খালেকদাদ চৌধুরী মুক্তমঞ্চে বসন্তকালীন সাহিত্য উৎসবের উদ্ধোধন করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. আব্দুল্লাহ-আল-মাসুম। সকাল ৯টা ৩০ মিনিটে নেত্রকোনার সাংস্কৃতিক সংগঠন গুলোর পরিবেশনায় বসন্তবরণ শুরু হয়।
পরে সকাল দশটায় শুরু হয় আনন্দ শোভাযাত্রা, শোভাযাত্রাটি খালেকদাদ চৌধুরী মুক্তমঞ্চ থেকে শুরু করে শহরে প্রধান সড়ক গুলো প্রদক্ষিণ করে আবার খালেকদাদ চৌধুরী মুক্ত মঞ্চে এসে শেষ হয়। পরবর্তীতে ভাষা আন্দোলন, মহান মুক্তিযুদ্ধ ও ২০২৪ এর শহিদদের স্মরণে ১ মিনিট নীরবতা পালনের পর একুশে পদকপ্রাপ্ত সাহিত্যিক খালেকদাদ চৌধুরীর সমাধিতে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করা হয়।
এছাড়াও দিনব্যাপী কর্মসূচীর মধ্যে রয়েছে শিশুদের মুক্ত চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, স্বরচিত কবিতা ও গল্প পাঠের আসর, আবৃত্তি, আলোচনা অনুষ্ঠান,পুরস্কৃত প্রিয়জনদের হাতে আনুষ্ঠানিকভাবে পুরস্কার প্রদান ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
মুক্ত চিন্তার বিকাশ ও সাহিত্য চর্চায় নতুন প্রজন্মকে উদ্ধুদ্ধ করণের লক্ষ্যে প্রতি বছরের ন্যায় এবারও খালেকদাদ চৌধুরী সাহিত্য পুরস্কার ১৪৩১ প্রদান অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। কবি হাসান হাফিজকে খালেকদাদ চৌধুরী সাহিত্য পুরস্কার ১৪৩১ প্রদান করা হবে।
এমআর-২

ভৈরবে বসন্ত-ভালোবাসা দিবসে বেড়েছে ফুল কেনার ধুম
পহেলা ফাল্গুন ভালোবাসা দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসকে কেন্দ্র করে চাঙা হয়ে উঠেছে ফুলের দোকানগুলো। ঋতুরাজ বসন্ত আর ভালোবাসা দিবসকে রাঙাতে কতই না আয়োজন, যার মূল অনুষঙ্গ রং-বেরঙের ফুল। বসন্ত বরণে আনন্দে মাতবে তরুণ-তরুণীসহ নানা বয়সের মানুষ। সব আবেদন, অনুরাগ, শ্রদ্ধা আর ভালোবাসা বহিঃপ্রকাশের বড় মাধ্যম ফুল, বাসন্তী রঙের শাড়িতে সাজবে তরুণীরা মাথায় গুঁজবে বাহারি ফুল।
প্রতিবছর দেশে ফুলের চাহিদা বাড়ে ফেব্রুয়ারি মাসে। এই সময়টাতে ব্যাপক চাহিদা থাকে বিভিন্ন উৎসবের কারণে। বছরের অন্য যে কোনো সময়ের তুলনায় ফেব্রুয়ারি মাসে ফুলের চাহিদা থাকে আকাশচুম্বী, ফুলের ভরা মৌসুমে বসন্ত বরণ, বিশ্ব ভালোবাসা দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। এ তিন দিবসে বাজার ধরে ব্যস্ত সময় পার করছে ফুল ব্যবসায়ীরা।
এ সময়ে সারা দেশে প্রায় ৩৫০ থেকে ৪০০ কোটি টাকার ফুল বিক্রি হয়।
সেই সুবাদে কিশোরগঞ্জের ভৈরবেও জমে উঠেছে ফুল বেচাকেনা বিভিন্ন ফুলে দোকানও নার্সারিতে সাজিয়ে রেখেছে বাহারি ফুলের সাঁজ। বিশেষ করে মুক্তিযোদ্ধা চত্বর মোড়ে সাজিয়ে বসেছে বাহারি ফুলের সাজঘর। এ যেন ঢাকার বাহিরে আরেকটি শাহবাগ মোড়। প্রতিবছর ফেব্রুয়ারিতে ফুলের দোকানগুলোতে ভিড় থাকে চোখে পড়ার মতো। এছাড়া বছরজুড়ে বিশেষ করে জম্মদিন, বিয়ে, বিভিন্ন সামাজিক -সাংস্কৃতিক ধর্মীয় উৎসবকে কেন্দ্র করে সারা বছর জুড়েই ফুল বাণিজ্য চলে।
ব্যবসায়ীরা জানান, প্রতিবছর গড়ে ২০শতাংশ হারে দেশে ফুল উৎপাদন বাড়ছে। এছাড়া দেশে অনেক ফুল চাষ করা যায় তবে অর্কিড ফুলসহ বেশ কিছু ফুল দেশে চাষ হচ্ছে না ফলে এ ধরনের ফুল বিদেশ থেকে আমদানি করা হয়।
ভৈরব উপজেলার গোছামারা এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, মাঠভর্তি বাগানে শোভা পাচ্ছে বিভিন্ন জাতের ফুল। সেই ফুলের বাগানে পরিচর্যা করছেন চাষীরা। ফুলচাষি রাজু মিয়া, জাকির মিয়া বলেন, বসন্তবরণ, ভালোবাসা দিবস আর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে ফুলের চাহিদা থাকে বেশি। সেই চাহিদা মেটাতে আমরা দিনরাত পরিশ্রম করতে হয়। বাজার ধরার জন্য ফুল গাছের পরিচর্যা করছি। ফুল যেন ভালো থাকে এ জন্য কাজ করছি।
ফুল বাগানের মালিক ময়না বলেন, সারা বছরই আমরা ফুল বিক্রি করে থাকি। তবে প্রতিবছর বিশেষ দিনগুলোতে ফুলে অতিরিক্ত চাহিদা থাকে। আমরা আমাদের বাগান থেকে নিজেদের দোকানের চাহিদা মিটিয়ে যারা মৌসুমি ব্যবসায়ী বা এই বিশেষ দিন গুলোতে অস্থায়ী দোকান নিয়ে বসে তাদের কাছে ও ফুল বিক্রি করি। ফুলের দাম ও ভালো পাচ্ছি।
এছাড়াও বঙ্গবন্ধু সড়কে মুক্তিযোদ্ধা চত্বর মোড়ে, কমলপুর নিউটাউন, বাসস্ট্যান্ডের কলেজ রোডসহ বিভিন্ন এলাকায় অস্থায়ী ফুলের দোকানে সাজিয়ে রয়েছে বাহারি রঙের ফুল।
ফুল বাগানের মালিক মো. দুলাল মিয়া বলেন, ৩২ বছর যাবৎ আমি ফুলের ব্যবসা করে আসছি। প্রথমে ঢাকা সাভার ছিলাম ভৈরবে ব্যবসা শুরু করি ২৩ বছর হয়। আমাদের ফুল ব্যবসায়ীদের সারা বছরের আয়ের একটা বৃহৎ অংশ ফেব্রুয়ারি মাস থেকে আসে। এই বছর আমাদের ব্যবসাও স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে আছে। বছরের অন্য সময় এত পরিমাণ ফুল বিক্রি হয় না। তাই ভরা মৌসুমে যা আয় হবে তা দিয়েই সারা বছর চলা যাবে। খরচ বাদ দিয়ে এর তিন ভাগের একভাগ মুনাফা থাকবে। ফুল বেশি দামের ব্যাপারে তিনি বলেন, আমাদের বেশি দামে ফুল কিনে আনতে হচ্ছে, তাই বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। আবার বিদেশি ফুল আমদানিতে খরচ বেশি হচ্ছে। সে কারণে ফুলের দাম কিছুটা বাড়তির দিকে। তবে ফেব্রুয়ারির বিশেষ দিবসগুলোতে ক্রেতারাও এই দাম নিয়ে আপত্তি জানাচ্ছেন না।
ভৈরবে বিভিন্ন ফুলের দোকানগুলোতে ঘুরে দেখা গেছে, লাল গোলাপ বিক্রি হচ্ছে প্রতিটি ৪০-৫০টাকা, গোলাপ ও রজনিগন্ধা কাগজে মোড়াতে লাগছে ১০০-১৫০টাকা, অন্য রঙের গোলাপ বিক্রি হচ্ছে ৭০-৮০টাকা, রঙিন গ্লাডিওলাস ৬০-৭০টাকা, রজনীগন্ধার স্টিক ৪০-৫০টাকা, গাঁদা ৫০ টাকা ১শ, ফুলের তোড়া নরমাল সর্বনিম্ন ৩৫০ টাকা থেকে ১হাজার টাকা, জারবেরা ৫০ থেকে ২০০ টাকা। এর মধ্যে তরুণদের পছন্দের শীর্ষে লাল গোলাপ ও জারবেরা রয়েছে বলে জানান তিনি।
এমআর-২

বসন্ত বিকেলে স্বস্তির বৃষ্টিতে ভিজল ঢাকা
বসন্তের শুরুতে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে ঝুম বৃষ্টি হয়েছে। এ সময় হিম বাতাসও বয়ে যায়। বৃহস্পতিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে বৃষ্টি নেমে আসে। যদিও কয়েক মিনিট স্থায়ী ছিল এই ঝুম বৃষ্টি। এতে ধুয়ে মুছে গেছে ঢাকার উড়ন্ত ধুলাবালু।
বৃষ্টিতে রাজধানীর বিভিন্ন রাস্তায় পানিও জমে যায়। এতে রাস্তায় পথচারীরা কিছুটা ভোগান্তিতে পড়েন। বাগেরহাটসহ দেশের আরও কিছু জায়গায় এদিন বৃষ্টি হয়েছে।
এদিকে সারাদেশে বজ্রসহ বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অফিস। শীতের প্রকোপ শেষে ধীরে ধীরে বাড়তে থাকা তাপমাত্রা আবারও কমতে পারে।
গত ২৪ ঘণ্টায় (সকাল পর্যন্ত) দেশের সর্বোচ্চ ২৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে হাতিয়ায়। বরিশালে রেকর্ড করা হয়েছে ১৫ মিলিমিটার। ঢাকায় এ সময়ে সামান্য বৃষ্টিপাত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। ভোরের দিকে সারাদেশের কোথাও কোথাও হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে।
চট্টগ্রাম বিভাগের রাতের তাপমাত্রা ১ থেকে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়তে পারে। এছাড়া দেশের অন্যত্র তা সামান্য কমতে পারে। সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে।
দ্বিতীয় দিনের অবস্থায় বলা হয়েছে, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া দেশের অন্যত্র আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।
ভোরের দিকে সারাদেশের কোথাও কোথাও হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে। সারাদেশে রাতের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে এবং দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
তৃতীয় দিনের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া দেশের অন্যত্র আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।
ভোরের দিকে সারাদেশের কোথাও কোথাও হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে। সারাদেশে রাত এবং দিনের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে।
বর্ধিত পাঁচ দিনের আবহাওয়ার অবস্থায় বলা হয়েছে, বৃষ্টিপাতের প্রবণতা কমতে পারে।

আসছে বসন্ত, সাজছে রাবির চারুকলা
বছরঘুরে এসেছে বসন্ত। প্রকৃতিতে তাই লেগেছে রংয়ের ছোঁয়া। দক্ষিণা দুয়ারে বইছে ফাগুনের হাওয়া। কোকিলের কণ্ঠে আজ বসন্তের আগমনী গান। ফুলে ফুলে ভ্রমরও করছে খেলা। গাছে গাছে পলাশ আর শিমুলের মেলা। সব কিছুই জানান দিচ্ছে আজ পহেলা ফাল্গুন।
‘ফাগুন হাওয়ায় হাওয়ায় করেছি যে দান,
তোমার হাওয়ায় হাওয়ায় করেছি যে দান
আমার আপনহারা প্রাণ আমার বাঁধন ছেঁড়া প্রাণ
তোমার অশোকে কিংশুকে
অলক্ষ্য রঙ লাগল আমার অকারণের সুখে’
ঋতুরাজকে স্বাগত জানাতে প্রকৃতির আজ এতো বর্ণিল সাজ।
বসন্তকে স্বাগত জানাতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) চারুকলা অনুষদ সাজছে বর্ণিল সাজে।মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে সরেজমিনে দেখা যায়, চারুকলা অনুষদ প্রাঙ্গণে চলছে বসন্ত বরণ উপলক্ষে শেষ মুহুর্তের প্রস্তুতি।
অনুষদের প্রধান ফটক পেরুতেই দেখা হয় চারুকলা অনুষদের শিক্ষার্থী জান্নাতুল আরেফিন আফ্রিদীর সঙ্গে। তিনি জানান, এবারের বসন্ত আয়োজনের দায়িত্বে রয়েছে অনুষদের ‘চিত্রণ-২৫’ ব্যাচের শিক্ষার্থীরা।
একটু সামনে এগুতেই দেখা যায় চারুকলার ফটক সাজাতে বেশ ব্যস্ত সময় পার করছেন অনুষদের কারুশিল্পের শিক্ষার্থী নুরেন তারান্নুম নওরিন ও ছাপচিত্রের শিক্ষার্থী তীর্থ কান্তি প্রামাণিক। দুজনে বলেন, বসন্তকে ঘিরে তারা সকলে একত্রিত হয়ে কাজ করছেন। কাজ করতে সকলের অনেক ভালো লাগছে। অনুষদের মঞ্চের দিকে আরও জোড়ালোভাবে কাজ চলছে বলে জানান তারা।
মঞ্চের দিকে চোখ দিতেই দেখা গেলো হলুদ, লাল আর রক্তিম পলাশের বর্ণের ন্যায় সাজানো হচ্ছে মঞ্চ। কাছে গিয়ে দেখা যায় পুরো মঞ্চ জুড়ে বাসন্তী রঙের আভা ছড়াচ্ছে বেশকিছু লোকজ ধাঁচের চিত্র। চিত্রগুলোর মধ্যে রয়েছে, মাছ, শখের হাঁড়ি, ঢোল, ঘুড়ি, হাতপাখা, একতারা, লক্ষ্মী পেঁচা, হাতিসহ বিভিন্ন লোকজ ধাঁচের মোটিফ। আর এই পুরো মঞ্চ রাঙিয়ে তুলতে কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করছেন অনুষদের চিত্রকলা ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থী প্রণব রায়।
প্রণব রায় বলেন, এবারের পুরো মঞ্চটিকে মুলত ঘুড়ির আদলে প্রস্তুত করা হচ্ছে। বসন্তের বাতাসে খোলা মাঠে, গ্রামেগঞ্জে একসময় ঘুড়ি উড়ানো হত। তবে কালের বিবর্তনে ঘুড়ি এখন হারানোর পথে। সেই ঘুড়িকে মানুষের মাঝে টিকিয়ে রাখতেই আমাদের এই প্রয়াশ। এছাড়া এবারে ডামি বানানো না হলেও চিত্রকর্মের মাধ্যমেই পুরো বসন্তের আমেজকে আমরা ফুটিয়ে তুলতে চাই। এজন্য আমাদের সকল সাজসজ্জায় বাসন্তী রঙের আর্ধিক্য রেখেছি। এছাড়া যেহেতু বসন্তের দিনে ভালোবাসা দিবস, স্বরস্বতী পূজা এবং সুন্দরবন দিবস। আমরা এক আয়োজনের মধ্য দিয়ে সবগুলোই উদযাপন করব।
মঞ্চের সামনে দেখা যায় পাটকাঠি এবং কাগজের ফুল, লতা-পাতা ও পাখি দিয়ে বানানো হচ্ছে কোকিল চত্বর। এর নিচে দেওয়া হয়েছে একটি ক্যাকটাস। এবিষয়ে অনুষদের কারুশিল্পের শিক্ষার্থী ফুয়াদ হোসেন বলেন, সকল বাধা বিপত্তি উতরিয়ে বসন্ত আসছে। বসন্তের কোকিল ডাকছে। এভাবে আমাদেরও বেশ কণ্টকাকির্ণ পথ পাড়ি দিতে হয় জীবনে। সেজন্যই ক্যাকটাসের উপরে বানানো হয়েছে কোকিল চত্বর। এছাড়া আমরা সবকিছুই সাজিয়েছি বাঙালিয়ানা ধাঁচে। খড়, পাটকাঠি, বাঁশসহ হাতের কাছে পরে থাকা বিভিন্ন উপকরণ দিয়েই আমরা রাঙিয়ে তুলছি চারুকলা প্রাঙণকে।
বসন্তের দিনের আয়োজন নিয়ে কথা হয় চিত্রকলার শিক্ষার্থী উম্মে রুম্মান অভির সঙ্গে। তিনি বলেন, এবারের বসন্তে কাঁথা পুড়িয়ে শীতকে বিদায় জানানোর পাশাপাশি চারুকলার নবীনদের বরণ করে নেয়া হবে। কাঁথা পুড়ানোর আগে থাকবে আলোচনা সভা। সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, উপ-উপাচার্যদ্বয় এবং কোষাধ্যক্ষসহ অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত থাকবেন। এরপরে একটি র্যালি নিয়ে ক্যাম্পাসের প্রধান সড়কগুলো প্রদক্ষিণ করা হবে। এছাড়া বসন্তের দিনে চারুকলা প্রাঙণে থাকবে বেশকিছু পিঠার দোকান আর দিনব্যাপী পুতুল চত্বরে চলবে চিত্রকর্ম প্রদর্শনী। আর সাংস্কৃতিক আয়োজনে থাকবে বাঙ্গালী সংস্কৃতির সঙ্গে সম্পর্কিত আবৃতি, নাচ ও গানের পরিবেশনা।
সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে চারুকলা অনুষদের ডীন অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী বলেন, আমরা প্রতি বছরের ন্যায় এবারও বসন্ত বরণের আয়োজন করেছি। এটা পর্যায়ক্রমে আমাদের অনুষদের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থীরা প্রতিবছর আয়োজন করে থাকে। এই উৎসবের মাধ্যমে আমরা আমাদের বাঙালীর ঐতিহ্যকে তুলে ধরার চেষ্টা করি। পহেলা বৈশাখ যেভাবে জাতীয় উৎসবে পরিণত হয়েছে, সেভাবে এই উৎসবটিও যেন জাতীয় উৎসবে পরিণত হয় আমি সেই আশাবাদ ব্যক্ত করছি।
এমআর

মেজর জেনারেল মাহমুদ হাসান আদর্শ মহাবিদ্যালয়ে নবীনবরণ ও বসন্তবরণ
"এসো হে নবীন, মিলি প্রাণের উৎসবে, পুরনো জঞ্জালকে পেছনে ফেলে চলো সামনে এগিয়ে চলি" স্লোগানে টাঙ্গাইলের মেজর জেনারেল মাহমুদ হাসান আদর্শ মহাবিদ্যালয়ে নবীনবরণ ও বসন্তবরণ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) সকালে কলেজ মাঠে নবীন বরণ ও বসন্ত বরণ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দীন হায়দার।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মম্মদ কায়সার, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মুহাম্মদ আব্দুর রহিম সুজন, টাঙ্গাইল পৌরসভার মেয়র এস.এম. সিরাজুল হক আলমগীর, প্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডির আজীবন দাতা সদস্য ইঞ্জিনিয়ার রাশেদ হাসান, ও মো. আমিরুল ইসলাম খান।
মেজর জেনারেল মাহমুদ হাসান আদর্শ মহাবিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. ইব্রাহিম এতে সভাপতিত্ব করেন।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন, উপাধ্যক্ষ মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম এবং সঞ্চালনা করেন, সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ বাংলা বিভাগের প্রধান তরুণ ইউসুফ।
এআই
আপনার অনুসন্ধানকৃত ডাটা খোঁজে পাওয়া যায়নি
